সুপার ফুড গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা
কলার খোসার ব্যবহার - কলার খোসার উপকারিতাগাজরের উপকারিতা ভোগ করতে চান তাহলে সর্দি কাশি সহ শীতকালীন রোগ সমূহ হতে রেহাই পেতে নিয়মিত খান গাঁজর। বিটা ক্যারোটিন যুক্ত এ সবজিতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান থাকায় পুষ্টিবিদরা গাজর কে রেখেছেন সুপার ফুডের তালিকায়।
চলুন সুপার ফুড এই সবজি থেকে কি কি পুষ্টি উপাদান আমরা পেতে পারি তা জানতে এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ে আসি।
পোস্ট সূচীপত্রঃ
- গাজরের পুষ্টির পরিমাণ
- গাজর সেবনের আগে জেনে নিন কিছু টিপস
- গাজরের উপকারিতা
- রূপচর্চায় গাজরের উপকারিতা
- গাজরের অপকারিতা বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
- দিনে কয়টি গাজর খাওয়া উচিত
- খালি পেটে গাজর খেলে কি উপকার হয়
- গাজর খাওয়ার পর পানি খাওয়া যাবে কিনা
- মন্তব্য
গাজরের পুষ্টির পরিমাণ
গাজরে যে কত পুষ্টি উপাদান আছে তা থেকে উপকারিতা পেতে চলুন সেই পরিমান গুলো জেনে নি।
- প্রোটিনঃ ১ গ্রাম
- ফ্যাটঃ ০.২ গ্রাম
- ক্যালসিয়ামঃ 33 মিলিগ্রাম
- ফাইবারঃ ৩ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেটঃ ৯ গ্রাম
- চিনিঃ 6 গ্রাম
- পটাশিয়ামঃ ২৪০ গ্রাম
- ফসফরাসঃ ৩৬ মিলিগ্রাম
- ম্যাগনেসিয়ামঃ ১৮ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন বি ২ঃ ২০.০৬ গ্রাম
- ভিটামিন বিঃ 0.04 মিলিগ্রাম
গাজর সেবনের আগে জেনে নিন কিছু টিপস
আল্লাহ্তালা যেমন দুনিয়াতে বিভিন্ন ধরনের সবজি,ফল দিয়েছেন তেমনি কিছু বিধি নিষেধ দিয়েছেন সেগুলো গ্রহন করার ক্ষেত্রে।কিন্তু আমরা সেদিকে কর্ণপাত না করে হরহামেশা খেয়ে থাকি।ফলে সেগুলো থেকে নাম মাত্র উপকার পাই।এখানে গাঁজর সেবনের সঠিক নিয়ম জানবো আমরা।
- কাঁচা খাওয়ার সময় খোসা ছাড়িয়ে নেওয়া উচিত।
- গাজর বেশিক্ষণ রান্না করে খাওয়া উচিত নয়।
- গাজর দিয়ে তৈরি রান্না খাবার ঠান্ডা হয়ে গেলে তবে খাওয়া উচিত।
- গাজর বাজার থেকে নিয়ে এসে বাসায় পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে খাওয়া উচিত।
গাজরের উপকারিতা
সুগন্ধি পাতার চাহিদা মেটাতে গাজরের চাষ শুরু হলেও দিনশেষে পুষ্টিবিদরা পুষ্টি খুঁজে পান গাজরের মূলে। তাই সময়ের আবর্তনে এখন পাতার চেয়ে মূলের চাহিদায় বেশি। মুল জাতীয় সবজি গাজরের আদি নিবাস দক্ষিণ-পশ্চিম ও ইউরোপীয় হলেও সবচাইতে বেশি গাজর চাষ হয় চীনে। পুষ্টিকর আঁশ সমৃদ্ধ গাজর তরকারিতে সবজি এবং সালাদ দুই ভাবেই খাওয়া যায়।
তবে পুষ্টির অপচয় রোধে রান্নার চেয়ে কাঁচা খাওয়ার পরামর্শ পুষ্টিবিজ্ঞানীদের। রঙিন সবজি এই গাজরে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন আর খনিজ উপাদান যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। চলুন গাজরের বিভিন্ন উপকারিতা জেনে নি।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
গাজরে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন-এ , ভিটামিন সি সহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান। যা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। নিয়মিত খাদ্য তালিকায় গাজর খাওয়া জীবাণু থেকে আপনার শরীরের জন্য একটি প্রতিরক্ষামূলক ঢাল হিসেবে কাজ করবে।
- দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে গাজর
গাজরে থাকা বিটা ক্যারোটিন লিভারে প্রবেশ করে তা ভিটামিন এতে রূপান্তরিত হয়। পরবর্তীতে এটি চোখের রেটিনায় পৌঁছে চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কারণ এটা প্রমাণিত যে ভিটামিন এ চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে কার্যকর।
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে
মরণব্যাধি ক্যান্সার বর্তমানে সর্দি কাশির মতো প্রায় প্রতিটি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। গাজর আমাদের শরীরের অ্যান্টি ক্যান্সার উপাদানগুলিকে রিফিল করে। গাজর খেলে ফুসফুস ক্যান্সার এবং প্রোস্টেট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেক কম থাকে।
তাই আমাদের উচিত বেশি বেশি গাজর খাওয়া। আপনি যদি দৈনিক একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ গাজর নিয়মিত খান তাহলে আপনার ক্যান্সারে ঝুঁকে অনেক কমে যাবে এটা বেশিরভাগ সমীক্ষায় প্রমাণিত।
- লিভারের জন্য গাজর
আমাদের শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে গাজরের মধ্যে থাকা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন।লিভারের হেপাটাইটিস, সিরোসিস এবং ক্যান্সারের মত সমস্যা থেকে লিভারকে রক্ষা করতে প্রতিদিন একটি করে গাজর খাওয়া উচিত।
- অ্যান্টি এজিং এর জন্য গাজর
গাজরে থাকা বিটা ক্যারোটিন যা আমাদের শরীরের ভিতরে গিয়ে অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। আমাদের শরীরে ক্ষয়প্রাপ্ত সেলগুলোকে ঠিকঠাক করে যা সাধারণ মেটাবলিজমের কারণে হয়ে থাকে। তাছাড়া আমাদের যৌবনকে অধিক সময়ের জন্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। এটি এজিং সেলুলার গতি ধীর করে দিতে সাহায্য করে যার ফলে যৌবনকে অধিক সময়ের জন্য ধরে রাখা সম্ভব হয়।
- অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে
গাজরের উপকারিতার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা হলো এটি অ্যান্টিসেফটিক হিসেবে কাজ করে। কাটা জায়গায় ইনফেকশন হওয়া থেকে রক্ষা করে। গাজরের রস কোথাও কেটে গেলে বা পুড়ে গেলে সেখানে গাজরের রস লাগিয়ে দিলে ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা আর থাকে না।
- হৃদরোগের জন্য গাজরের উপকারিতা
হৃদপিন্ডের বিভিন্ন অসুখের জন্য গাজরের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হারবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের মতে প্রতিদিন একটি গাজর খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুকি ৬৮% পর্যন্ত কমে যাবে।
- স্টকের ঝুঁকি কমাতে
এমন কিছু কিছু খাদ্য রয়েছে যেগুলো স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এদের মধ্যে গাজর একটি। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যারা প্রতিদিন ৬ টি গাজর খায় তাদের তুলনায় যারা একটি গাজর খায় তাদের স্টোকের ঝুঁকি অনেকটা বেশি থাকে। তাই স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় গাজর যুক্ত করা উচিত আমাদের সকলেরই।
- ওরাল স্বাস্থ্যের জন্য গাজরের উপকারিতা
গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা দাঁত, মাড়ি শক্ত করতে এবং ভালো রাতে সাহায্য করে। গাজর আপনার দাঁত পরিষ্কার করে ফলে মুখের দুর্গন্ধ এবং মুখের অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে আপনি রেহাই পেতে পারেন খুব সহজেই। আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত গাজর রেখে মুখের নানাবিদ সমস্যা থেকে দূরে থাকুন।
- কৃমি রোগের জন্য গাজর
ছোট বড় সবারই কৃমির সমস্যাটা একটা খুব সাধারণ সমস্যা। তবে এটা শিশুদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। একটি গাজর কেটে ২০ থেকে ৪০ মিলি জুস করে যদি শিশুকে খাওয়ানো যায় তাহলে দেখবেন শিশু পেটের কৃমি থেকে মুক্তি পাবে।
- মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি
নার্ভাস সিস্টেমকে শক্ত ও মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে গাঁজর খুবই গুরুত্পূর্ণ ।
- অন্তঃসত্ত্বা মা ও শিশুর জন্য
অন্তঃসত্ত্বা মা ও শিশুর জন্য গাজর খুবই ভালো একটি সবজি। গাজরের রসে শিশুর জন্ডিস হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।
- ওজন কমাতে
গাজর খেলে পেট ভরবে ঠিকই কিন্তু ক্যালরি যোগ হবে না শরীরে। তাই ওজন কমাতে বেশি বেশি গাজর খাওয়া উচিত যারা ওজন নিয়ে ভুগছেন বিভিন্ন সমস্যায়।
- যৌন শক্তি বাড়ায়
মাসে অন্তত ২৫০ গ্রাম গাজরের পুডিং খেলে কিংবা গাজর ও মূলার রস পান করলে আপনার যৌন শক্তি বাড়বে। প্রতিদিন দুই থেকে তিন গ্লাস গাজরের রস পান করলে শুক্রাণুর সংখ্যা বেড়ে যায়।
- রক্তস্বল্পতা নিরাময় করে
গাজরে অতিরিক্ত আয়রন থাকায় তা রক্তের ক্ষয় দ্রুত দূর করে এবং প্রতিদিন নিয়মিত গাজর রস পান করলে রক্ত পরিষ্কার থাকে।
আমরা জানলাম গাজরের নানা প্রকার উপকারিতার কথা। আমরা একটু সুস্থ, একটু ভালো থাকার জন্য কত কিছুই না করি। যদি একটি খাদ্য উপাদান আমাদের দৈনন্দিন খাবারের তালিকা যোগ করে নিজেকে আরও একটু ভালো রাখতে পারে তাহলে সে কাজটা কেন করব না। চলুন আমরা নিজেদেরকে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় একটি গাজর রাখি।
রূপচর্চায় গাজরের উপকারিতা
শীতকালীন সবজি গাজরে রয়েছে নানান পুষ্টিগুণ। এটা যেমন স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী তেমনি চোখের দৃষ্টি শক্তিতে উপকারী ,চুলের জন্য উপকারী তেমনি ভাবে ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী। ত্বকের জন্য গাজর কতটা উপকারী এই বিষয়টা অনেকেরই অজানা।
তবে মানুষ ভেদে একেক জনের ত্বক একেক রকম। তাই সব রকম ত্বকে একই ভাবে ইউজ করলে খুব একটা ভালো ফলাফল পাওয়া যায় না। তাই কোন ত্বকের জন্য কেমন ভাবে গাজরের পেস্ট ব্যবহার করা উচিত তা নিয়ে বিস্তারিত জানবো।
- শুষ্ক ত্বক
যাদের শুষ্ক ত্বক শীতকালে তাদের ত্বক আরো বেশি শুষ্ক হয়ে যায়। এক্ষেত্রে তারা যদি গাজরের পেস্ট ব্যবহার করে তবে অনেক উপকৃত হবে। এক্ষেত্রে গাজরের একটু পেস্ট বানিয়ে নিয়ে তার সাথে এক চামচ মধু ও একটু দুধ নিয়ে পেস্ট বানিয়ে 20 থেকে 25 মিনিট মুখে মেখে রাখতে হবে। যখন শুকিয়ে যাবে তখন পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নেবে। এটা সপ্তাহে দুদিন করলে খুবই ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
- তৈলাক্ত ত্বক
যাদের তৈলাক্ত ত্বক তারা একটু গাজরের পেস্ট নিয়ে তার সাথে একটু বেসন নিয়ে তার সাথে একটু টক দই নিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে লাগাতে হবে। যদি টক দই হাতের কাছে না থাকে তাহলে দু এক ফোঁটা লেবুর রস নিলেও হবে। কিন্তু যেহেতু লেবুর রস অনেকের ক্ষেত্রে ইরিটেশন তৈরি করে তাই স্কিপ করাই ভালো।
উপরের তিনটা জিনিস একসাথে মিশিয়ে নিয়ে মুখে মেখে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করে তারপরে শুকিয়ে গেলে হালকা কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলবে। সপ্তাহে দুদিন করলেই কাঙ্খিত ফলাফল পাওয়া যাবে।
- বয়সের ছাপ দূর করতে
শীতকাল কিংবা গরমকাল উভয় মৌসুমেই সূর্যের রশ্মির আলট্রাভায়োলেট রশ্মি আমাদের ত্বকের উপর প্রভাব ফেলে। আমাদের চোখের নিচে, নাকের পাশে বলিরেখা পরে যায়। এই রেখা দূর করতে এক্ষেত্রে গাজরের রস তার সাথে একটু গোলাপজল মিশিয়ে নিয়ে মুখের উপর স্প্রে করতে হবে।
ফলে মুখে যেমন আসবে স্নিগ্ধতা তেমনি বয়সের ছাপ অনেকটা কমে যাবে। সপ্তাহে দুদিন করলে কার্যকর ফল পাওয়া যাবে।
- উজ্জ্বলতা বাড়াতে
যদি আপনি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে চান তাহলে গাজরের একটু পেস্ট নিয়ে দেখুন আপনাকে কেমন ফলাফল দেয়। এক্ষেত্রে আপনি একটু গাজরের পেস্ট নিয়ে তার সাথে ডিমের সাদা অংশ নিয়ে তার সাথে একটু টক দই মিশিয়ে তিনটি উপকরণ একসাথে মিশিয়ে মুখে পেস্ট বানিয়ে লাগিয়ে নিন।
আধাঘন্টা রাখার পর যখন শুকিয়ে আসবে তখন হালকা গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিন। এটা সপ্তাহে কয়েকবার করলে ত্বক অনেকটা উজ্জ্বল হয়ে যাবে। গাজরে থাকা বিটা ক্যারোটিন ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- বলি রেখা দূর করতে
বয়সের কারণে অনেক সময় ত্বকে বলি রেখা দেখা দেয়। তখন গাজরের একটু পেস্ট বানিয়ে এর সাথে একটু এলোভেরা জেল মিশিয়ে নিলে বলি রেখা দূর হয়। কেননা এই গাজর ত্বকের কোলাজেন তৈরি করতে ভীষণ উপকারী।
- চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
ত্বকের যত্নে গাজরের উপকারিতা গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি উপকারিতা হলো ঝকঝকে চুল। গাজর আপনার চুলকে অত্যাবশ্যকিও ভিটামিন সরবরাহ করে যা আপনার চুল গুলিকে আগের চাইতে শক্তিশালী, ঘন এবং চকচকে করে তুলবে।
গাজরের অপকারিতা বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
এই গাজর প্রচুর ভিটামিন সমৃদ্ধ একটি সবজি এবং শীতকালে এটি বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। তাই আমরা শীতকালে এটি বেশি গ্রহণ করি ভিটামিন বা এর থেকে উপকারিতা পাওয়ার। আশায় কিন্তু এর অতিরিক্ত ব্যবহার সম্পর্কে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে।
কেননা এটি অতিরিক্ত সেবন করলে আপনাকে এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হতে পারে। চলুন জেনে নি এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো কি কিঃ
- শরীরে ভিটামিন এর ঘাটতি পূরণ করতে গাজর খুবই উপযোগী। কিন্তু এ গাজর যদি আপনি অতিরিক্ত গ্রহণ করেন। তাহলে আপনার শরীরে ত্বকের রং পরিবর্তন করে দিতে পারে।
- যারা ডায়াবেটিস রোগী তাদের গাজর কাচা কিংবা সেদ্ধ উভয় অবস্থা বা উভয় প্রকারে খাওয়া থেকেই বিরত থাকতে হবে। কেননা গাজরে প্রচুর মিষ্টি থাকে যার ফলে সুগার বা ডায়াবেটিস রোগীদের সমস্যা হতে পারে।
- কারো কারো গাজরে এলার্জি হতে পারে।
- গাজরে থাকা ভিটামিন দাঁত মাড়ি শক্ত করে এবং পরিষ্কার করে কিন্তু বেশি পরিমাণে গাজর খেলে শিশুদের দাঁত ক্ষয় হতে থাকে।
- গাজর সঠিক পরিমাণে খেলে তা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। কিন্তু যদি অতিরিক্ত পরিমাণ গ্রহণ করা হয় তাহলে এর বিপরীত কাজ শুরু করে।
- অতিরিক্ত গাজর সেবনের ফলে মহিলাদের বুকের দুধের স্বাদ পরিবর্তন হয়। যদি ছোট বাচ্চা থাকে তখন সে বাচ্চারা দুধ পান করতে চায় না।
দিনে কয়টি গাজর খাওয়া উচিত
গাজরের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। গাজরে ভিটামিন এ, ম্যাগনেসিয়া্ম , ভিটামিন সি ,ক্যালসিয়াম ,আয়রন সমৃদ্ধ একটি রঙিন সবজি। প্রতিদিন এক থেকে দুটি গাজর খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। গাজরে প্রচুর কেরোটিন থাকে ১০০ গ্রাম গাজরে ৪ হাজার মাইক্রোগ্রাম থাকে।
যা পানিতে দ্রবীভূত হতে পারে।নিজেকে সুস্থ রাখতে আমরা প্রতিদিন কত ঔষধ গ্রহণ করি।বাজার থেকে দামি দামি ফল কিনে খাই। কিন্ত আমাদের হাতের কাছে পুষ্টি সমৃদ্ধ সবজি গাঁজর যদি প্রতিদিন এক থেকে দুইটা সেবন করি তাহলে নানান প্রকার রোগ বালাই থেকে মুক্তি পেতে পারি।
খালি পেটে গাজর খেলে কি উপকার হয়
গাজর একটি পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু সবজি। খালি পেটে খাওয়া হলে অনেক স্বাস্থ্য উপকার হতে পারে। খালি পেটে গাজর খাওয়ার কিছু উপকারিতা হলো- গাজরের প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন থাকে যা শরীরে ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত হয়।
ভিটামিন এ ভালো দৃষ্টিশক্তি, সুস্থতা এবং শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য অপরিহার্য উপাদান হিসেবে কাজ করে।আমাদের মধ্যে এমন প্রবণতা যে খাবারে পেট ভরলেই হল।তাই পেট পুড়ে যেকোনো সময় খাবার খাই।অথচ খালি পেটে গাঁজর খেলে তা থেকে আমরা যথাযথ উপকারিতা পেতে পারি।
গাজর খাওয়ার পর পানি খাওয়া যাবে কিনা
ফল বা সালাদ সহ কিছু খাওয়ার সাথে সাথে পানি পান করার পরামর্শ দেওয়া হয় না পুষ্টিবিদরা । এর পেছনে বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে। খাদ্য অন্ত্রে পৌঁছানোর পর হজমকারী এনজাইম গুলি কাজ শুরু করে। খাবার পানি যুক্ত হলে এনজাইম গুলি পাতলা হয়ে যায় এবং হজমকে প্রভাবিত করে।
ফলে পেটে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়।তাই যে কোন খাবার থেকে সুফল পেতে নিয়ম অনুসরণ করে খাবার খাওয়া উচিত।
আরও পড়ুনঃচুল পড়া বন্ধ করার তেল, স্যাম্পু ও ঘরোয়া উপায়
মন্তব্য
উপরোক্ত পোষ্টটি পড়ে গাজরের উপকারিতা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো মাথায় রাখুন এবং সুস্বাদু গাজর খান আর আপনার শরীরের বিভিন্ন রোগ গুলোকে বিদায় জানিয়ে স্বাস্থ্য ভালো রাখুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url